Sunday, October 12, 2025
HomeHEALTH & FITNESSএকসাথে খাওয়া-দাওয়া করার উপকারিতা কী?

একসাথে খাওয়া-দাওয়া করার উপকারিতা কী?

একসাথে খাওয়া, এমনকি এটা যদি মাঝেমধ্যেও হয়, তাহলে আপনার মানসিক সুস্থতা, খাদ্যাভ্যাস উন্নত হতে পারে। এমনকি আপনার স্বাদ বাড়াতে এটা সহায়তা করতে পারে। প্রতি সন্ধ্যায় একসাথে খাবারের সময় না থাকলেও মাঝেমধ্যে একসঙ্গে খাওয়ার সুফল আছে।

কোয়ালিটি টাইমহ

 বেশি সময় না পেলেও অল্প সময়টাকে অর্থবহ করে তোলা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিদিন পরিবারের সাথে একসাথে খাওয়ার সময় নাও হতে পারে। কিন্তু আপনি যদি সপ্তাহে একদিন বা দুদিন একসাথে খাবার অভ্যাস করেন, সেটা আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কিশোর-কিশোরীদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ এর অভ্যাস গড়ে উঠতে পারে খাবার টেবিলে।

অনেকে হয়ত খাবার টেবিলে আসতে চায়না, গল্প করতে চায় না, তাদের মধ্যে আস্তে আস্তে অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। মনে রাখতে হবে, বয়স্কদের তুলনায় কিশোর-কিশোরীদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশ হয়  ভিন্ন সময়ে। তাদের অনেকে বেশি রাতে ঘুমায় এবং সকালে ঘুম থেকে উঠতে চায় না। তাদের সঙ্গে সুন্দর সময় কাটানোর চিন্তা করতে হবে। রবিবার বা সপ্তাহের কোন একসময় মজাদার লাঞ্চ করা ও গল্প করা, রাতে ফেরার পর একসাথে বসে চা, কফি, স্ন্যাকস গ্রহণ করা। এরকম সময় কাটালে একসময় হূদ্যতা গড়ে উঠবে।

 খাওয়ার সময়টাকে উৎসবে পরিণত করাঃ

 বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছেন, যদি সম্ভব হয় খাবারের সময়টাকে একটা নিয়মিত অনুষ্ঠানের মত করে ফেলা। যেমন রবিবার দুপুরের খাবার এবং মঙ্গলবার রাতে বিশেষ খাবার। খাবার কতটা সুস্বাদু হল তা নিয়ে না ভেবে একসাথে খাওয়ার দিকে জোর দেয়ার কথা বলছেন তারা। এছাড়া টেবিলে নানা ধরনের খাবার রাখার কথাও বলেন বিশেষজ্ঞরা। টেবিলে বিভিন্ন ধরনের খাবার থাকলে শিশুরা নিজেরাও একটিভ হয়ে যায়। নুডুলস,  টোস্টসহ শিশুদের পছন্দের খাবার থাকে, তখন তারা সেখান থেকে বেছে নিতে পারে এবং যখন সবাই একসঙ্গে খাচ্ছেন তখন তারাও সক্রিয় থাকে, এমনকি কথোপকথনেও যোগ দেয়। 

টেবিল সাজানো, খাবার পরিবেশন ও খাবার শেষে পরিষ্কার করার ক্ষেত্রেও শিশুদের উৎসাহিত করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ শিশুরা যদি বুঝতে পারে যে, খাবারের সময় তাদের অবদানও আছে, তাহলে তাদের কাছে একসাথে বসে খাওয়াটা বেশি উপভোগ্য হবে এবং এতে আগ্রহীও হবে।

যেকোন ডিভাইস দূরে রাখুনঃ

 খাবারের সময় যেকোনো ধরনের ডিভাইস দূরে রাখার পরামর্শ দেন গবেষকেরা। বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে যে, খাবারের সময় স্ক্রিনের দিকে চোখ থাকলে অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে ওঠে এবং ওবেসিটি ও তৈরি হয়। তাছাড়া যখন আপনার চোখ স্ক্রিনের দিকে থাকবে তখন আপনার মাথায় থাকবে না কি খাচ্ছেন, কতটা খাচ্ছেন,যাদের সাথে  খাচ্ছেন তাদের সঙ্গে কোনো ধরনের কথা হবেনা। অভিভাবকেরা স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে খাবার খাওয়ার অভ্যাস করলে, বাচ্চারা ও তাদের অনুসরণ করবে।। খাবারের সময়টা খুব গুরুত্বপূর্ণ। মাত্র 15 থেকে 20 মিনিট সময় লাগে খেতে। আর সেই সময়টায় টিভি বা ফোন বা অন্যান্য ডিভাইস দূরে রাখাই ভালো। একটি গবেষণায় উঠে এসেছে যে,

ডাইনিং টেবিল বাদ দিয়ে ভাবুনঃ

  ব্রিটেনে এক গবেষনায় উঠে এসেছে যে, 20% ব্রিটিশ নাগরিকের বাড়িতে ডাইনিং টেবিল নেই।  বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়াতে এরকম বহু পরিবার আছে, যাদের ঘরে খাবার টেবিল নেই। কিন্তু তার মানে এই না যে, একসঙ্গে খাওয়া যাবেনা। অনেক পরিবার মেঝেতে একসঙ্গে বসে খাবার খান। উঠোনে বারবিকিউ করা বা বাইরে একসাথে বের হয়েও খাবারের সময় টা উপভোগ করা সম্ভব। ঘরে খাবার বানিয়ে কোন পার্কে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এত ছোট পিকনিক করে ফেলাও সম্ভব।এতে শিশুরা আনন্দ পাবে, আর একসঙ্গে খাবারটা নেয়া যাবে। এমনকি সোফায় বসে একসঙ্গে খেলেও টিভির সুইচটা অফ করে নিন। আর গল্প করতে করতে খাবারটা গ্রহণ করুন।

বাস্তবসম্মত কিছু ভাবুনঃ

 একসঙ্গে খাওয়ার বিষয়টা বাস্তবসম্মতভাবে ও ভাবার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।যারা নিম্নআয়ের মানুষ, যারা কাজ করেন, চলাচলে অক্ষম এমন ব্যক্তি বা শারীরিক অসুস্থতা যাদের আছে, তাদের নিয়ে সব সময় একসঙ্গে খাওয়া সম্ভব নয় সেটাও কিন্তু মাথায় রাখতে হবে। একসঙ্গে খাবার অভ্যাসটি  যেকোনো ভাবে তৈরি হতে পারে। প্রতিদিন না হলেও সপ্তাহে এক বা দুই দিন। আর শুধু পরিবারের সদস্য নয়, বন্ধু বা কলিগরাও একসঙ্গে খাবার সময় বের করলে হূদ্যতা বাড়ে। মানসিক চাপ কমানোর পাশাপাশি বিভিন্ন সমস্যার সমাধান বের হয়ে আসতে পারে একত্রে খাবারের অভ্যাস তৈরি করে। তাছাড়া সবাই মিলে খাবার গ্রহণ করলে খাবারের অপচয় কম হয় বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

RELATED ARTICLES

1 COMMENT

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments