Sunday, October 12, 2025
HomeLATEST NEWSহার্ট অ্যাটাক হচ্ছে কিনা তা বোঝার উপায় কী? লক্ষণগুলো কখনও এড়িয়ে যাবেন...

হার্ট অ্যাটাক হচ্ছে কিনা তা বোঝার উপায় কী? লক্ষণগুলো কখনও এড়িয়ে যাবেন না

হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ: দিব্বি সুস্থ মানুষ, তেমন কোনো ধরনের অসুস্থতা ও নেই কিন্তু হঠাৎ করে প্রচন্ড ঘাম হচ্ছে। বুকের ঠিক মাঝ বরাবর ব্যাথ্যা,সেটা নেমে যাচ্ছে পেটেও। ভাবছেন যে হয়তো গ্যাস্ট্রিকের ব্যাথা। কিন্তু সেটা কমছে না বরং বেড়েই যাচ্ছে। আর ব্যথাটা বুক থেকে শুধু পেটে নয় ঘাড় আর বাম হাতে ও ছড়িয়ে পড়ছে। আপনি কি জানেন যে এসব উপসর্গ কোন রোগের লক্ষণ? এটা কতটা মারাত্মক হতে পারে? এমন উপসর্গ থাকলে ঠিক সময়ে চিকিৎসা না পেলে আপনার মৃত্যু হতে পারে.। তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক এসব উপসর্গ কিসের লক্ষণ এবং এগুলো দেখা দিলে কি করতে হবে। একটু আগে যে লক্ষণ বা উপসর্গ এর কথা আমি বলেছি সেগুলো

হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডঃ হিমেল সাহা বলেন, এ ধরনের উপসর্গ দেখা দিলে সময় মতো চিকিৎসা না পেলে যে কারো মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। হার্ট অ্যাটাকের আরো কিছু লক্ষণ রয়েছে, যেগুলো দেখা দিলে দেরি না করে দ্রুত হাসপাতালের জরুরি বিভাগে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। এসব লক্ষনগুলো হচ্ছে:

বুকের মাঝ বরাবর ব্যাথ্যাঃ

ড. হিমেল সাহা বলেন, হার্টঅ্যাটাকের প্রথম উপসর্গ হচ্ছে বুকে ব্যথা। বুকের ডান বা বাম পাশে ব্যথা হবে না, একেবারে বুকের মাঝ বরাবর ব্যাথ্যা হবে। একে বলে সেন্ট্রাল চেস্ট পেইন। এই ব্যথা ক্রমাগত বাড়তে থাকবে। ব্যথার তীব্রতা কেমন হবে সেটি বর্ণনা করতে গিয়ে মিস্টার সাহা বলেন যে, মনে হবে যেন বুকের মধ্যে কেউ চুরি চালাচ্ছে বা বুকের মধ্যে হাতিপারা দিচ্ছে এবং বুকের হাড় ভেঙে যাচ্ছে। এটাকে হার্টঅ্যাটাকের একদম আগের ঘটনা বলে থাকেন চিকিৎসকরা। সাথে বুক ধড়ফড় করা বা পল্পিটেশন থাকবে। ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশন এর তথ্য অনুযায়ী, বুকে তীব্র ব্যথা সাথে সাথে যদি চরম অস্বস্তিবোধ থাকে তাহলে দেরি না করে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

হাত ও ঘাড় ব্যাথাঃ

কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডঃ হিমেল সাহা বলেন, বুকের ব্যথা এক সময় বাম হাত এবং ঘাড়ের দিকে ছড়িয়ে পড়বে। যাকে বলা হয় ব্যাথাটা ক্রেডিট করবে। ব্যথা ঘাড়ে ছড়িয়ে পড়লে মনে হবে যেন গলার মাংসপেশি কেউ চেপে ধরে আছে। যাদের ডায়াবেটিস থাকে তাদের ব্যথা বোঝার ক্ষমতা টা খুব কম থাকে। যার কারণে তাদের অনেক সময় বড় ধরনের হার্ট অ্যাটাক হয়ে গেলেও তারা টের পান না। যাদের দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে আরো বিপদ।

ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশন এর তথ্য অনুযায়ী, যদি আপনার বাম হাতে ব্যথা নিচের দিকে নামতে থাকে এবং সেইসাথে গলায় চেপে ধরা ভাব থাকে তাহলে সেটি হার্টের সমস্যার লক্ষণ। এই ব্যথা যদি চলে না যায় আর এর আগে যদি হার্টের কোন ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। সংস্থাটি বলছে, যদি গলায় কোন কিছু আটকে থাকার অনুভূতি হয়, সেই সাথে গলা ধরে আসে, কোন কিছু গিলতে গেলে সমস্যা হয়, ব্যথা অনুভূত হয় তাহলে সেটি হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ। এছাড়া যদি চুয়াল এবং পিঠেও ব্যথা অনুভব হয় তাহলে সেটি হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ হতে পারে। নারীদের মধ্যে এই ধরনের সমস্যা বেশি দেখা দেয়।

অতিরিক্ত ঘামঃ

ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, শরীরচর্চা করার সময় বা খুব বেশি গরমে যদি ঘাম হয় তাহলে সেটা স্বাভাবিক। কিন্তু যদি বুক ব্যথার সাথে সাথে প্রচন্ড ঘাম হয় তাহলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত। কারণ সেটি হার্টঅ্যাটাকের একটি লক্ষ্য। বিএসএমএমইউয়ের কার্ডিয়াক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডঃ হিমেল সাহা বলেন, হার্ট অ্যাটাকের সময় দেহ খুব অস্থির হয়ে পড়ে।। বুক ব্যথা হয়, তাই সেই সময় স্বাভাবিক বা প্রচন্ড রকমের ঘাম হয়। তার মতে, অনেক সময় একজন ব্যক্তির মধ্যে হার্টঅ্যাটাকের একাধিক উপসর্গ থাকতে পারে। যেমন বুক ব্যথার সাথে সাথে ঘাম শুরু হতে পারে, অস্থির লাগতে পারে।

পেটে তীব্র ব্যাথাঃ

বুকের প্রচন্ড ব্যথা অনেক সময় পেটে ছড়িয়ে পড়ে। এ ব্যথাকে অনেকে গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা মনে করতে পারে। বিশেষ করে যাদের দীর্ঘদিন ধরে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে বেশিরভাগ সময় তারা বুঝতে পারেন না যে সেটি আসলে কিসের ব্যথা। চিকিৎসকরা বলছেন সে ক্ষেত্রে হার্ট অ্যাটাকের ব্যথা পেটে হলে সেটি তীব্র হবে। তার সাথে প্রচন্ড জ্বালা পোড়া থাকবে।

কাশি ও শ্বাসকষ্টঃ

যদি হার্টঅ্যাটাকের পর হার্ড ফেইলরের দিকে যায়, তাহলে তার শ্বাসকষ্ট শুরু হবে। হার্ট ফেইলুর হলে বা হার্ট অকেজো হয়ে পড়লে ফুসফুসে পানি আসে। এর কারণে রোগীর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। হার্ট এ্যার্টাকের যদি জরুরী ভিত্তিতে না নেয়া হয় তাহলে হার্ড আস্তে আস্তে দুর্বল হয়ে পড়ে। ঠিকমতো কাজ করতে পারে না, তখন সারা দেহে পানি এসে যায়। এর মধ্যে প্রথমেই পানি আসে ফুসফুসে। এর ফলে কাশি এবং শ্বাসকষ্ট হয়। এটি হার্ট অ্যাটাক এর পর হার্ট ফেইলুরের একটি উপসর্গ।

অজ্ঞান হয়ে যাওয়াঃ

যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংস্থা সিডিসি এর তথ্য অনুযায়ী, দুর্বল অনুভব হওয়া, মাথা ঘোরা এবং অজ্ঞান হয়ে যাওয়া হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ হতে পারে। চিকিৎসকদের মতে, বুকের ব্যথা অনেক সময় এতটা তীব্র হতে পারে যে এতে আক্রান্ত রোগী অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে। এটাও হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ।

বমি বমি ভাব ও বমিঃ

ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশন এর তথ্য বলছে, বমি বমি ভাব এবং বমি শুরু হলেই যে সেটি হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ তা নয়।। তবে যদি বমির সাথে বুকে ও তীব্র ব্যথা এবং অস্বস্তি থাকে তা হলে সেটা হার্টঅ্যাটাকের একটি উপসর্গ হতে পারে। এছাড়া ক্লান্তি এবং ক্লান্তিভাবও হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এবং প্রিভেনশন সিডিসি-এর তথ্য অনুযায়ী, যদি তেমন কোন কারণ ছাড়াই বমি শুরু হয় এবং আপনি কোন কারন ছাড়াই ক্লান্ত বোধ করতে থাকেন এবং সাথে যদি বুকে ব্যথা থাকে, তার মানে এটা হার্ট অ্যাটাকের কারণে হতে পারে। নারীদের ক্ষেত্রে এই উপসর্গগুলো বেশি দেখা দেয়। এ ধরনের উপসর্গ দেখা দিলে যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

তারা বলেন, হার্ট অ্যাটাক হয় হার্টের রক্তনালী বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে। চিকিৎসকদের মতে চর্বির জন্য হার্ট অ্যাটাক হয় না, হঠাৎ করে রক্ত জমাট বেঁধে রক্তনালী বন্ধ হয়ে যায়। এ কারণে সাথে সাথেই হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেন তারা। চিকিৎসকরা বলছেন, হাসপাতালে নেয়ার পর তার রক্ত তরল রাখার জন্য রক্ত পাতলা করে এমন ওষুধ দিতে হয়। একের সাথে যে রক্তনালী হার্টে রক্ত সরবরাহ করে সেটিকে প্রসারিত করার জন্য এক ধরনের ওষুধ দিতে হবে। চিকিৎসকদের ভাষায় যদি এটা দেয়া যায় তাহলে তার লাইফ সেভ হয়ে যাবে অর্থাৎ -বিশ্লেষণ জানতে আমাদের সাথে থাকুন।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments